ক্লাবফুট
ক্লাবফুট কি?
ক্লাবফুট বা বাঁকানো পায়ের পাতা শিশুদের একটি জন্মগত শারিরীক প্রতিবন্ধকতা যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘congenital talipesequinovarus’ (CTEV)। সাধারণত শিশুর পায়ের পাতা গোড়ালি হতে ভেতরের দিকে বাঁকনো অবস্থাকেই ক্লাবফুট বলা হয়।



বাংলাদেশে ক্লাবফুট এর ব্যাপকতা:
প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ৩৯০০ শিশু ক্লাবফুট নিয়ে জন্মগ্রহণ করে (এটি একটি শারীরিক সমস্যা যেখানে বাচ্চার ১টি বা ২টি পায়ের পাতা ভিতরের দিকে বাঁকানো থাকে)।
চিকিৎসা না করালে এটি আজীবন বিকলাঙ্গতা বা পঙ্গুত্ব বয়ে নিয়ে আসে। ফলে, এসব শিশু পরবর্তীতে পরিবারের বোঝা হয়ে যায়, যা দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ। পরবর্তী জীবনে এরা অন্য কোন পেশায় যোগ দিতে না পেরে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিতে বাধ্য হয়। এ কারণে বাংলাদেশের ভিক্ষুকদের উল্ল্যেখযোগ্য অংশ ক্লাবফুটধারী।
বড় শিশু বা বয়স্কদের ক্লাবফুট এর চিকিৎসার জন্য অর্থোপেডিক অস্ত্রোপচারই একমাত্র ভরসা; কিন্তু এটি অনেক ব্যয়বহুল যা আমাদের দেশের সাধারণ দরিদ্র মানুষের পক্ষে মেটানো সম্ভব হয় না। তবে ছোট শিশুরা পনসেটি পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেতে পারে। এটি অত্যন্ত কার্যকর, সুলভ এবং স্থায়ী ব্যবস্থা। নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুর পায়ের পাতার নরম বাঁকা অংশ ধীরে ধীরে ভাল হয়ে যায়।
ওয়াক ফর লাইফ – বাংলাদেশের ক্লাবফুট চিকিৎসা কার্যক্রম:
ওয়াক ফর লাইফ হল দি গ্লেনকো ফাউন্ডেশনের একটি কার্যক্রম। এটি বাংলাদেশের ক্লাবফুট চিকিৎসা কার্যক্রম যা ৩ বছরের নীচের শিশুদের পনসেটি পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিয়ে থাকে এবং যেখানে কোন বড় অস্ত্রপচারের প্রয়োজন হয় না।
ওয়াক ফর লাইফ ২০০৯ সালে পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। সাফল্য লাভের পর এই কার্যক্রম সারাদেশে ৩৪টি ওয়াক ফর লাইফ ক্লাবফুট পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে সম্প্রসারিত করা হয়েছে এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। ২০১৬ সালে বিএমজে পুরষ্কার অর্জন করে।
